খালেদ মাসুদ পাইলট। তার বড় পরিচয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক। সাবেক এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনের অন্যতম নক্ষত্র। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফলতম এই উইকেটরক্ষক আন্তজার্তিক ও ঘরোয়া অঙ্গন থেকে ব্যাট ও প্যাড গুছিয়েছেন অনেক আগেই। এবার ‘শিক্ষা ও সবুজ’ নগরী খ্যাত রাজশাহীকে পর্যটন নগরী হিসেবে একধাপ এগিয়ে নিতে উদ্যোক্তার খাতায় নাম লিখিয়েছেন খালেদ মাসুদ পাইলট।
রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় যেখানে অধিক মুনাফা লাভের প্রতিযোগিতা চলছে, সেখানে সৌন্দর্য ও নান্দনিকতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাজশাহী মহানগরীর পদ্মা পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘নোঙর’। সেখানে ইনডোর সুবিধার পাশাপাশি একটি বড় অংশ আউটডোর সুবিধা রয়েছে। শিশুদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে উন্মুক্ত বিশাল স্পেস। যেখানে অনায়াসেই পরিবার-পরিজন নিয়ে সবুজ ঘাসের গালিচায় বসে পদ্মার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এ ছাড়া, ‘নোঙর’র ইনডোর ডেকোরেশনে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় ঐতিহ্যের বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন উপকরণ। প্রমত্তা পদ্মার শান্ত জলের পাশে এমন আয়োজন যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
দুপুর গড়িয়ে সূর্যের তাপ যত কমতে থাকে, ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় ততই বাড়ে নোঙরে। সবচেয়ে সুন্দর একটা আবহ তৈরি হয়ে পশ্চিম দিগন্তে সূর্য হেলে পড়ার পর। এরপর ঝিরঝির বাতাসের সঙ্গে নোঙরের আয়োজন ভিন্নমাত্রা যোগ করে ভ্রমণ পিপাসুদের মনে। বিকেল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত নোঙরে ক্রেতা সমাগম থাকছে চোখে পড়ার মতো। পবিত্র রমজানে প্রতিদিনই ভিন্ন আবহে এখানে ইফতার পার্টি জমে উঠছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেকেই রেন্টুরেন্ট ব্যবসায় অনেক আগেই এসেছেন। তবে তাদের কারো দেখে আমি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ হইনি। এই ব্যবসা কর্মাশিয়াল জায়গা থেকেও করিনি। আমি রাজশাহীতে বড় হয়েছি। রাজশাহীতে খেলাধুলা শুরু করেছি। আমাদের থেকে মানুষ ভালো কিছু আশা করেন।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো ভালো জায়গা যেগুলো ট্যুরিজমের জন্য বিখ্যাত, সেখানে সমুদ্রের পাড় বা নদীর পাড়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটনের জন্য এটা খুবই মূল্যবান জায়গা। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীকে গ্রিন এবং ক্লিন সিটি হিসেবে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাকে আমি সর্বপ্রথম আইডিয়া দেই যে, আপনি রাজশাহীকে এত গ্রিন ও ক্লিন করার উদ্যোগ নিয়েছেন, যা প্রত্যেকে প্রশংসা করেন। আমরাও রাজশাহীকে নিয়ে গর্ব করতে পারি। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে যদি আরও এগিয়ে আসি, তাহলে রাজশাহীকে আরও সুন্দর করে গড়তে পারবো। সেই জায়গা থেকে আমার মনে হয়েছে যে নদীর পাড়গুলোকে যদি আমরা আরও সুন্দর করতে পারতাম।
খালেদ মাসুদ পাইলট বলেন, আমার আগে থেকেই একটা ইচ্ছা ছিল রাজশাহীতে নদীর পাড়ে এমন একটা জায়গা গড়ে তুলবো। যেখানে প্রচুর সবুজ গাছ থাকবে। মুক্ত বাতাসের মধ্যে বসে ভ্রমণ পিপাসুরা স্নিগ্ধতা নেবেন। আমি যেহেতু একজন খেলোয়াড়, একটু বেশি খোলামেলা জায়গা পছন্দ করি। শহুরে জীবনের মানুষও একটু খোলামেলা জায়গা চান। যেখানে প্রকৃতির অবাধ সৌন্দর্য থাকবে। সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই নোঙরকে সাজানো হয়েছে। ইনডোর, আউটডোরে খোলামেলা সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহীতে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসেন। যারা পদ্মার পাড় ঘুরতে আসেন। কিন্তু একটা সময় পদ্মা পাড়ে গরু-ছাগলের বিষ্ঠা পড়ে থাকতো। মানুষ হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। তো সেই জায়গায় মনে হয়েছে সারাদিনের কাজকর্ম শেষে মানুষ যেন একটি সুন্দর পরিবেশে বসে অন্তত এক কাপ কফি খেতে পারেন। সেই ব্যবস্থাটা আমরা করতে চেয়েছি।
তথ্যসূত্র: রাইজিং বিডি
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।